1. yousuf.islamics@gmail.com : admin :
  2. editor@sirajganjsangbad.com : Md. Ruhul Amin : Md. Ruhul Amin
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বেলকুচিতে পৌর মেয়রের ওপর হামলা, শিশু, সংবাদকর্মী সহ আহত ৫ জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার অভিষেক অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন তাড়াশের মেরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত টোল আদায় বন্ধে, বেলকুচি পৌর মেয়রকে শোকজ করেছে আদালত বাতিল হলো উপজেলা পরিষদ আদর্শ একাডেমির টেন্ডার-ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম বেলকুচিতে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত আলিমের মত্যু, আটক ৩ তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সঞ্জিত কর্মকারের গণসংযোগ এনায়েতপুরে নিখোঁজের একদিন পর দুই শিশুর লাশ উদ্ধার ছেলেকে মাদ্রসায় রেখে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু

তিন মাসে কারাগারে মৃত্যু বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর

সিরাজগঞ্জ সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • ১১১ বার পঠিত

গত তিন মাসে কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির ১২ নেতাকর্মী। কারাগারে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে দাবি বিএনপি ও নিহতদের পরিবারের। তবে যে কোনো বন্দি অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দল ও অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের যেসব নেতাকর্মী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন—তাদের তালিকা করছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, মূলত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ, হরতাল, অবরোধসহ একদফা আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় অসংখ্য নেতাকর্মী হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং।

কারাগারে বন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বজনদের অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পর অনেকের সঙ্গে চরম অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। কারাগারে কেউ অসুস্থ হলে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও দেওয়া হয় না। বিনা চিকিৎসায় এবং অবহেলায় অনেকেই মারা গেছেন। কেউ কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে কারাগারেই ধুঁকছেন। এসব কারণে কারাবন্দি অনেক নেতার পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন বলে এই প্রতিবেদককে জানান।

অন্যদিকে চলমান আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে সারা দেশে আরও ১৮ জন নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ কয়েকজন নেতা দীর্ঘদিন ধরে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আছেন। তাদের মধ্যে আলালের একটি কিডনি অকেজো। আরেকটির উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কারাগারে থাকায় সেই সুযোগ পাননি তিনি।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সহকারী জাহাঙ্গীর হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘কিডনির গুরুতর সমস্যার কারণে তিনি (আলাল) প্রায়ই কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয় না। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে মুক্ত করার জরুরি।’

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক বিএনপি নেতা আমিনুল হকেরও কিডনিতে পাথর ধরা পড়েছে। তার বড় ভাই মাইনুল হক কালবেলাকে জানান, ‘সম্প্রতি হাতিরঝিল থানার মামলায় ডিবিতে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ব্যথা অনুভব করলে আমিনুলকে রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষায় তার কিডনিতে পাথর ধরা পড়ে। প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। কিন্তু দ্রুত সময়ের মধ্যে সার্জারি না করালে বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।’

কারাগারে তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ তুলে অবিলম্বে আমিনুল হকের মুক্তি দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার সুব্রত কুমার বালার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জের সিনিয়র জেলসুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, ‘কারাগারে বন্দিদের কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

৩ মাসে মারা গেছেন ১২ জন:

বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত কারাগারে তাদের ১২ নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ জানুয়ারি রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার জেলা কারাগারে মারা গেছেন। বিএনপির দাবি, মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাগারের ভেতরে পুলিশি নির্যাতনে অসুস্থ হলে ওইদিন রাত ৮টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান।

এ ছাড়া গত বছরের ১ নভেম্বর গ্রেপ্তারের সময় মারা যান কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. জাকির হোসেন। ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগরের চাঁদগাঁও থানার ৫নং মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি গোলাপুর রহমানকে (গোলাপ কন্ডাক্টর) ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২৫ নভেম্বর তিনি কারাগারে মারা যান। ২৪ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৩৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ৩০ নভেম্বর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই নেতাকে অসুস্থ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে দাবি তার পরিবারের।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ শেষে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান খান হিরোকে। ১ ডিসেম্বর কাশিমপুর কারাগারে তার মৃত্যু হয়। ১১ ডিসেম্বর রাজশাহী কারাগারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন রাজশাহী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (৫২)।

বিএনপি মিডিয়া সেলের ডিজিটাল বিভাগের মাহবুব মানিককে গত ৩০ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গুরুতর অসুস্থ হলে ২০ নভেম্বর তিনি মুক্তি পান। এরপর গত ১৫ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। নওগাঁর নজিরপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিবুল মণ্ডলকে গত ২৭ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে অসুস্থ হয়ে ২০ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এ ছাড়া গাজীপুরের কাপাসিয়ার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. শফিউদ্দিন মাস্টারকে গত ২৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি অসুস্থ হয়ে ২৫ ডিসেম্বর মারা যান। মুগদা থানা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান কাজলকে গত ২৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২৬ ডিসেম্বর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ কাজলকে হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার মৃত্যু হয়। খুলনা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন মিজান দীর্ঘদিন কারাগারে থাকা অবস্থায় চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলা কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকার দোহার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মো. হারুন মেম্বারকে গত ২০ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অসুস্থ অবস্থায় তিনি ২৪ ডিসেম্বর জামিনে মুক্ত হন। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ জানুয়ারি মারা যান হারুন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে ও বাইরে বিরোধী দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের ওপর নানা অমানবিক আচরণ চলছে। কারাবন্দিদের নির্যাতন করা হচ্ছে অবর্ণনীয় ও পৈশাচিক কায়দায়। বন্দিদের চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। অসুস্থ বন্দিকে হাত-পায়ে শিকল পরিয়ে কারা হাসপাতালে ফেলে রাখা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের ৬৮টি কারাগার একেকটি টর্চার সেল। গায়েবি মিথ্যা মামলায় সুস্থ সবল নেতাকর্মীদের ধরে নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপের পর লাশ বানিয়ে বের করা হচ্ছে। কারাগার থেকে বেরোচ্ছে লাশের সারি।’

তবে বিএনপির এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জের সিনিয়র জেলসুপার সুভাষ কুমার ঘোষ কালবেলাকে বলেন, ‘বন্দিদের সঙ্গে কারাগারে সর্বোচ্চ মানবিক আচরণ করা হয়। কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের পরামর্শে বিধি মোতাবেক কারাগারের ভেতরে ও বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।’

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ সিরাজগঞ্জ সংবাদ
Theme Customized BY Shakil IT Park