সাব্বির মির্জা, (তাড়াশ) প্রতিনিধি :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের নওগাঁয় শাহ শরীফ জিন্দানী (রহঃ) এর মাজারে শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর ১২ ঘটিকার সময় সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় , মাজারের উওর পাশে বাঁশবাগানের ভিতর গোল হয়ে আড্ডায় বসা অনেকের মুখ থেকে সাদা ধোঁয়া উড়ছে। মাটি দিয়ে তৈরি এক প্রকারের কলকি মুখে নিয়ে নিশ্বাস ছাড়লেই বের হচ্ছে আগুনসহ ধোঁয়া। কেউ কেউ আবার কাঁচি বা ছুরি দিয়ে কিছু কাটিকুটি করছে। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল- ‘সিদ্ধি খাচ্ছে তারা’। ‘সিদ্ধি’ বলতে তারা মাদকদ্রব্য ‘গাঁজা’কে বুঝিয়েছে, সেটিও ব্যাখ্যা করল কেউ কেউ।
বাঁশবাগানে উপস্থিত কয়েকজন বলেন, নওগাঁ মাজারের বার্ষিক ওরস ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে অসহায়-গরিবদের খিচুড়ি খাওয়ানো হয়ে থাকে। ধর্মীয় এ ধরনের অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভক্ত-আশেকানরা সেখানে আসেন। অন্যদিকে অনেক ‘পাগল ভক্ত’ও সেখানে আসেন। পাগল’দের কেউ কেউ কেবল গাঁজা সেবন করলেও একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই বাঁশবাগানে মাদকের আসর বসিয়েছে।
এদিকে পবিত্র স্থান নওগাঁয়র এই মাজারে এভাবে প্রকাশ্যে মাদক সেবনের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসি । তারা বলছেন, মাজারে এভাবে মাদক সেবন কখনই কাম্য নয়। কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করলে ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করা সম্ভব। মাজার সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলেন, বিভিন্ন সময় এসব মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সরিয়ে দেওয়া হলেও তারা কোনো কথা শনেনা । আবার অনেকে খোলা জায়গায় জড়ো হয়ে আসর বসিয়েছেন।
দেখা গেছে, বেশিরভাগ আসরে জীর্ণশীর্ণ পোশাকধারীরা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন পরিচ্ছন্ন পোশাকধারীরাও। প্রকাশ্যেই চলছে ছুরি দিয়ে কাটিকুটি। সেবনও চলছে প্রকাশ্যে। পাইপজাতীয় একটি বাঁশির ভেতরে গাঁজা ঢুকিয়ে মাথায় আগুন ধরিয়ে সিরিয়ালে সবাই সেবন করছেন।সেবনকারীদের একজন রফিক আলী বলেন, ‘এখানে তারা পাগলা সিদ্ধি খেয়ে থাকেন। সিদ্ধি খেলে ধ্যানে থাকলে খোদার সঙ্গে সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। সিদ্ধি না খেলে গভীর ধ্যান করতে পারেন না, তাই খোদার সাক্ষাৎও পাবেন না।’ তার মতো আরেক সেবনকারী মন্টু বলেন, ‘পাগলদের তো আর গাঁজা কিনে খাওয়ার টাকা নেই। অনেকে তাদেরকে কিনে দেয়, তারা বানিয়ে দিলে তাদেরও বিনে পয়সায় খেতে দেয়।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাজারের খেদমতকারীদের একজন বলেন, এসব মাদকসেবীর কারনে মসজিদ ও মাজার কর্তৃপক্ষ খুবই বিব্রত।
নওগাঁর মাজার শরীফের মোতওয়াল্লী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি মো. আব্দুল হাই সরকার বলেন, মাদকের ব্যাপারে মাজার কর্তৃপক্ষ জিরো টলারেন্স, মাদক সেবীদের আনাগোনা বৃহস্পতিবার একটু বেশি দেখা যায়, আমরা ওই দিনটা বেশি সতর্ক থাকি, প্রশাসনকে জানাই, প্রশাসনও ব্যবস্থা গ্রহণ করে,তবে বাইরে থেকে অপরিচিত কিছু লোক মাঝে মাঝে এসে থাকতে পারে, এ ব্যাপারে সাংবাদিক,ও প্রশাসন যাযা উদ্যোগ গ্রহণ করবে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন,মাদকের ব্যাপারে যে কোন ইনফরমেশন পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি, এ ব্যাপারে মাজার কর্তৃপক্ষ, সাংবাদিক, সচেতন মহল সহ, সকলের আরো বেশি সহযোগিতা পেলে, মাদক নির্মূলে প্রশাসন কার্যকর সফলতা পাবে।