1. yousuf.islamics@gmail.com : admin :
  2. editor@sirajganjsangbad.com : Md. Ruhul Amin : Md. Ruhul Amin
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বেলকুচিতে পৌর মেয়রের ওপর হামলা, শিশু, সংবাদকর্মী সহ আহত ৫ জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার অভিষেক অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন তাড়াশের মেরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত টোল আদায় বন্ধে, বেলকুচি পৌর মেয়রকে শোকজ করেছে আদালত বাতিল হলো উপজেলা পরিষদ আদর্শ একাডেমির টেন্ডার-ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম বেলকুচিতে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত আলিমের মত্যু, আটক ৩ তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সঞ্জিত কর্মকারের গণসংযোগ এনায়েতপুরে নিখোঁজের একদিন পর দুই শিশুর লাশ উদ্ধার ছেলেকে মাদ্রসায় রেখে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু

রোজায় বেড়েছে সিরাজগঞ্জের সলপের ঘোলের চাহিদা

সিরাজগঞ্জ সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০২৪
  • ৬৪ বার পঠিত

মোঃ রেজাউল করিম খান

ভোর থেকে স্থানীয় খামারিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা দুধ নির্দিষ্ট সময় জ্বাল দিয়ে জমিয়ে রাখা হয় সারা-রাত। পরের দিন বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরী হয় সুস্বাদু একটি পানীয়। সিরাজগঞ্জের সলপ রেল স্টেশনে তৈরী সুস্বাদু এই পানীয় খ্যাতি পেয়েছে ‘সলপের ঘোষ’ হিসেবে।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলপের সুস্বাদু পানীয় হিসেবে বাঙালিদের কাছে ঘোল ও মাঠার এখনো ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে রমজান এলে চাহিদা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। পাশাপাশি দামও বাড়ে বেশ। এই জনপদে ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ সলপের ঘোল,সিরাজগঞ্জ ছাড়াও স্বাদ নিচ্ছেন দেশের নানা জায়গার মানুষ। এই পানীয় বিক্রি করে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জীবন-জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়,শতবর্ষী এই ব্যবসার শুরু ১৯২০ সালে। ব্রিটিশ শাসনামলে উল্লাপাড়ার সলপ এলাকায় রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করা হয়। এর দুই বছর পরে ১৯২২ সালে এই স্টেশনের পাশেই ঘোল ও দধির ব্যবসা শুরু করেন স্থানীয় সাদেক আলী খান। তার মৃত্যুর পর ব্যবসার হাল ধরেছেন দুই ছেলে আব্দুল খালেক খান ও আব্দুল মালেক খান। সেই থেকে এখানকার তৈরি সুস্বাদু পানীয় শুধু চলনবিল ও যমুনা নদীবেষ্টিত এই জনপদে নয়, দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে আছে সলপের ঘোলের সুনাম। রোজার প্রথম দিন থেকেই গ্রাম কিংবা শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত ও প্রসিদ্ধ দই মিষ্টির দোকানগুলোতে প্লাস্টিকের বোতল ও হাঁড়িতে ঘোল সাজিয়ে বিক্রি করছেন ছোট-বড় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২৩ মার্চ) সলপ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের পাশে ঘোলের দোকানগুলোতে কেনা-বেচা জমে উঠেছে। দোকানের সামনে অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র সাজিয়ে চলছে বিক্রি। দোকানের পেছনে শ্রমিকেরা ঘোল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে এই ঘোলের জন্য এখানে এসেছেন।

ঘোল তৈরির কারিগররা বলেন, প্রতিদিন সুর্য্য ওঠার আগেই গ্রামের খামারিদের কাছ থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ করে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা জ্বাল দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় জ্বাল দেওয়ার পর পাত্রে রেখে সারা রাত রাখা হয় সেই দুধ। সকালে জমে থাকা সেই দুধের সঙ্গে চিনি ও অন্য উপকরণ মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু পানীয়।

ঘোল বিক্রেতারা বলেন, প্রতিদিন সলপ এলাকায় ১৭০ থেকে ২০০ মণ ঘোল ও মাঠা বিক্রি হয়। বর্তমানে প্রতি লিটার ঘোল ৬০ টাকা ও মাঠা ৮০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। তবে জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতি লিটার ঘোল ১০০ টাকা, মাঠা ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঘোল তৈরির উপকরণ দুধ ও চিনির দাম বাড়ার কারণে এই ঘোলের দাম গতবারের চেয়ে এবার বেড়েছে।

সলপ ঘোল ঘর অ্যান্ড সাদেক খান দই ঘরের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালেক খান জানান, তাদের এই ব্যবসার সঙ্গে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে গেছে। এখান থেকে কাজ শিখে কারিগররা উপজেলাতেই নিজেরাও দোকান তৈরী করেছেন। স্বাদ ও মান অনুযায়ী এই ঘোলের দাম তুলনামূলক সস্তা বলে মনে করেন ক্রেতারা। তাই সুস্বাদু এই পানীয় কিনতে তারা এখানেই আসেন।

গাজীপুর থেকে ঘোল কিনতে আসা শাহিন রেজা, ইমরান হোসেন ও রুহুল আমিন বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে তাঁতের শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, মিষ্টি, দই ও সলপের ঘোল নিয়ে গাজীপুরে বিক্রি করেন। রোজার প্রথম থেকে তারা প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ লিটার ঘোল ও মাঠা এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাই। এই রজমানে ঘোল ও মাঠার বেশ চাহিদা। গরমে রোজা রেখে এক গ্লাস সলপের ঘোল পান রোজাদারকে তৃপ্তি দেয়। সলপের ঘোল ছাড়া যেন আমাদের চলেই না।

বিক্রেতারা আরও বলেন, গাজীপুরে সলপের ঐতিহ্যবাহী ঘোলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। অল্প দামে ভালো মানের ঘোল ও মাঠা পেয়ে গ্রাহকরাও খুশি। বিশেষ করে রমজানে চাহিদা আরও বেড়েছে। অনেক গ্রাহক আগাম অর্ডারও করছেন, তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘোল সংরক্ষণ করতে না পারায় অনেক সময় ক্রেতার চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়ে ওঠে না বলেও জানান এই বিক্রেতারা।

জেলার শাহজাদপুর থেকে সলপের ঘোল কিনতে আসা মৌসুমী ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, সলপ থেকে সরাসরি এই ঘোল কিনলে কম দামে পাওয়া যায়। তাই মোটরসাইকেল নিয়ে সলপের ঘোল কিনতে আমি এখানেই চলে এসেছি। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ লিটার ঘোল কিনে নিয়ে যায়।

বেলকুচির উপজেলা থেকে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, রমজান মাসে প্রতিবছরই ৫-৬ বার সলপ স্টেশনে ঘোল কিনতে আসেন। এই ঘোলের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি আনছার আলী, আমজাত শেখ ও আব্দুল কাদের জানান, এক সময়ে সলপের তৈরি ঘোল ভারতের কলকাতার মানুষের কাছেও বেশ জনপ্রিয় ছিল। ট্রেনে করে প্রতিদিন ঘোল চলে যেতো কলকাতায়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জি. শওকত হোসেন জানান,সলপের ঘোলের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বৈশাখ মাসে এখানে ঘোলের মেলার আয়োজন করা হয়। সলপের ঘোলের স্বাদ সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ঘোল ব্যবসায়ীদের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার দাবিও জানান এই জনপ্রতিনিধি।#

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ সিরাজগঞ্জ সংবাদ
Theme Customized BY Shakil IT Park