শরীফুল ইসলাম ইন্না
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর মেয়রকে কলেজের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করার আদেশ স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই আদেশ আবার আপিল বিভাগ স্থগিত করেছে।
ফলে বেলকুচি মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকে পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজাকে সরিয়ে দেওয়ার আদেশ বহাল থাকলো।
গত ২১ এপ্রিল আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন। আগামী ৮ সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের দেয়া আদেশটি স্থগিত থাকবে বলে আপিল বিভাগের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এবিষয়ে বেলকুচি মডেল কলেজের গভর্নিংর বডির সভাপতি হাফিজুল রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশটি অবগত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিস ও বেলকুচি থানায় জমা দিয়েছি।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আনিছুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি আদেশের কপি আমার হয়ার্টসআাপ এ দেয়া হয়েছে। মেয়রের হাইকোর্টের আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই আদেশের ফলে মেয়রকে অপসারণের আদেশ বহাল থাকলো।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, আমি অফিসের বাইরে আছি, আদেশটি আমার দেখা হয়নি। অফিসে গিয়ে দেখে বলতে পারবো।
শিক্ষা সনদ জাল হওয়ায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজাকে গত ১২ ফেব্রুয়ারী বেলকুচি মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
মেয়রের শিক্ষা সনদ জাল, বিষয়টি উল্লেখ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে প্রমাণ পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেলকুচি পৌর মেয়র কে সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়।
মেয়রকে সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে বেলকুচি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাফিজুর রহমানকে সভাপতির দায়িত্ব দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন বেলকুচি পৌর মেয়র। হাইকোর্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ স্থগিত করে মেয়রকে সভাপতির দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়।
পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন হাফিজুর রহমান। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আপিল বিভাগের বিচারক এম. ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেন।
ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেলকুচি মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব থেকে মেয়রের অপসারণের আদেশ ও নতুন সভাপতি হিসেবে হাফিজুর রহমানকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা বহাল থাকলো।
বেলকুচি মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া বেলকুচি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষা সনদসংক্রান্ত জটিলতার কারণে পৌর মেয়েরকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে আমাকে দায়িত্ব দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু মেয়র তথ্য গোপন করে এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে বিষয়টি জানার পর মেয়রের জাল সনদের কাগজপত্র সহ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করি আমি। শুনানি শেষে বিচারক হাইকোর্টের আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন।
এ বিষয়ে বেলকুচি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ (তৎকালীন সহকারী অধ্যাপক) মো. আল মামুন বলেন, বেলকুচি মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সাজ্জাদুল হক রেজার বিবিএ ও এমবিএর সনদে রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ নেই। বিষয়টি জানার পর আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ জানাই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সনদ যাচাই-বাছাই করে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে তাঁকে গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে বেলকুচি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাফিজুর রহমানকে দায়িত্ব দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।