সাব্বির মির্জা,(তাড়াশ)প্রতিনিধি:
তাড়াশের সংগ্রামী মিনতি রানী বসাক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সমপ্রদায়ের পিছিয়ে পড়া নারীদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে চলেছেন নিরালসভাবে। তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে ২০০২ সালে নিজ গ্রামে গড়ে তোলেন আশার প্রদীপ নামে একটি সমবায় সমিতি। ঐ সমিতির মাধ্যমেই গ্রামীণ নারীদের সংগঠিত করতে থাকেন তিনি।
খোলা পায়খানার পরিবর্তে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা দিয়ে মানুষের সেবা করার যাত্রা শুরু মিনতি রানীর। পারিবারিক সচেতনতা তৈরি করতে এলাকার নারীদের নিয়ে স্বাস্থ্য-স্যানিটেশন ও পুষ্টি সচেতনতা বিষয়ে সভা করতেন পাড়ায়-পাড়ায়। হস্তশিল্প ও সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে বহু নারীকে উদ্যোগতা হতে সহায়তা করেছেন তিনি। সেই সময় নিজের অর্থ ও সদস্যদের আয়ের একটি অংশ দিয়ে ৯৪ জন সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীকে ছাগল পালনের জন্য প্রত্যেককে একটি করে ছাগল কিনে দেন। একই সঙ্গে গুড়পিপুল গ্রামে সারে চার লাখ টাকা দিয়ে ১৫ শতক জায়গা সমিতির নামে ক্রয় করেন। সেখানে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ২০০৪ সালে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি অনাগ্রসর নারীদের দিদি মিনতি রানীকে। ২০১২ সালে গড়ে তোলেন তাড়াশ ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক মহিলা উন্নয়ন। একই সঙ্গে স্থাপন করেন গুড়পিপুল আদিবাসী তাঁত শিল্প নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার অনুদান দেওয়া হয় এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উন্নয়নে।
তাঁত শিল্পে নিয়োজিত নারী শ্রমিক জেসমিন উরাঁও, কাঞ্চন উরাঁও, ননীবালা উরাঁও, মিনু রানী উরাঁও, কল্পনা রানী উরাঁও, সাধনা বালা উরাঁওসহ আরো অনেকে জানান, মাঠে কাজ করে তারা ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পেতেন। তাঁতের প্রশিক্ষণ নিয়ে শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা তৈরি করে এখন তাদের প্রতিদিন আয় হয় ৪০০ টাকা। আগের চেয়ে সংসারও বেশ ভাল চলছে।
মিনতি রানী বলেন, তাড়াশ ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক মহিলা উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে ৬৮০ জনের মতো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। যাদের অনেকেই নিজেরা উদ্যোগতা হয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।